কাকলী চক্রবর্তীঃ
গ্রীষ্ম হামাগুড়ি দিতেই বর্ষায় গা দোলাতে বর্ষা যেনো শরতের গায়ে উপচে পড়লো!
ঋতুর পালাক্রম হচ্ছে ঠিক-ই কিন্তু কোথাও যেনো একটা আবেশ এখন আর খুঁজে পাওয়া যায় না!
গ্রীষ্ম এলে কালবৈশাখীর তান্ডব দেখে ভয় পেতে হয় না গাঁয়ের রহিম চাচাকে!
কিংবা বর্ষার হাঁটুজলে কোমলমতি শিশুদের হৈচৈ মেলে না! মেলে না বর্ষার জোয়ারে ভেসে আসা পাঁচমিশালি মাছ ধরার কৌতূহল!
শরৎ আসলে চারিদিকে কদমের মুহুমুহু গন্ধে এখন আর মন মাতায় না গ্রাম্য নতুন বঁধুয়া!
বৃক্ষ ই তো নেই, ফুল ফুটিবে কিসে!
আকাশ টাও এখন আর শুভ্র তুলোর মতো মেঘবাগিচার সৃষ্টি করে না!
ঘরে ঘরে নতুন ধান তোলার যে রীতি রেওয়াজ ছিলো সেসব তো নেই-ই বরং হেমন্ত কালটা মনে রাখাটাই যেনো দূর্বিষহ!
কনকনে শীতে আগুনের প্রজ্জ্বলিত শিখায় গ্রামীণ লোকালয়ের পরিবেশ থাকতো সোনাখন্ডের মতো!
এখন সেসব মিশে গেছে ইট, পাথর আর কংক্রিটের পাষাণ দেয়ালে!
নানান ফুলের বাহারি সাজে যে বৃক্ষদেবী সেজে উঠতো আজ সে বৃক্ষদেবী অতি সামান্য অলংকারে নিজেকে কোনো মতে সাজায়! সেটাও যেনো নামমাত্রই বটে!না হয় ঋতুরাজ বসন্ত বেজায় অভিমান পুষবে বৃক্ষদেবীর উপর!
দোষ দিবো আর কাকে!
গ্রীষ্মে কালবৈশাখী ঝড়ের প্রকোপ, বর্ষায় হাঁটু সমান জলের কথা ভাবলে এখন আর রবী ঠাকুরের কথা মনে পড়ে না। অদূর ভবিষ্যৎ হয়তো একদিন বলেই বসবে রবী ঠাকুরের কথা ছিল মিথ্যে, না হয় এসব রূপকথার গপ্প!
কারণ পরিবেশ তো এসব প্রশ্নের বিপরীত.!
“দিনগুলো মোর সোনার খাঁচায়,
রইল না রইল না,
সে যে আমার নানা রঙের দিনগুলো!”
আসলেই সোনার খাঁচায় সোনালি দিনগুলো এখন আর নেই!
সবই যেনো স্মৃতির আড়ালে!