ভূয়া নিয়োগপত্র দিয়ে অর্থ আত্মসাৎকারী চক্রের ৪ জন প্রতারক আটক
নওগাঁ প্রতিনিধিঃ
র্যাবের পৃথক অভিযানে ভূয়া নিয়োগপত্র দিয়ে অর্থ আত্মসাৎকারী চক্রের ৪ জন প্রতারক আটক।
জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার কলেজ বাজার থেকে সোমবার বিকেল পৌনে ৩ টার দিকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভূয়া নিয়োগপত্র দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারক চক্রের মূল-হোতাসহ ৩ সদস্যকে ও পৃথক অভিযানে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টারদিকে একই উপজেলার তিলকপুর বাজার এলাকা থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভূয়া নিয়োগপত্র প্রদানের মাধ্যমে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারক চক্রের মূলহোতাকে আটক করেছে র্যাব।
সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নামে আটককৃত প্রতারক চক্রের সদস্যরা হলেন, উপজেলার মৃধাপাড়া গ্রামের বজলুর রশিদের ছেলে মোঃ রায়হানুল হক মৃধা (৪২), কেশবপুর গ্রামের মোঃ লুৎফর মন্ডলের ছেলে মোঃ জুয়েল হোসেন (৩৭)ও একই গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মোঃ ফিরোজ হোসেন(৩৮) এবং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়া প্রতারক হলেন, একই উপজেলার তিলকপুর গ্রামের মৃত উজির উদ্দিনের ছেলে মোঃ নুরনবী (৪০)।
ভূয়া নিয়োগপত্র দিয়ে অর্থ আত্মসাৎকারী চক্রের ৪ জন প্রতারক আটক
সত্যতা নিশ্চিত করে জয়পুরহাট র্যাব ক্যাম্পের কোম্পানী অধিনায়ক মেজর মোঃ মোস্তফা জামান এবং স্কোয়াড কমান্ডার সিনিয়র এএসপি মোঃ মাসুদ রানা জানান, রায়হানুল হক মৃধার ৫ জনের একটি সিন্ডিকেটের মূলহোতা যারা ২০১৪ সাল থেকে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সাথে প্রতারণামূলক কর্মকান্ডে জড়িত।
তারা অবৈধ নিয়োগের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বা কখনও কখনও জাল নিয়োগপত্র প্রদানের মাধ্যমে প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিত। তিনি নিজেকে সাংবাদিক হিসেবেও পরিচয় দেন। তিনি প্রার্থীদের আশ্বস্ত করেন ঢাকা সেনানিবাসের উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তাদের সাথে তার দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে। মোঃ জুয়েল এবং ফিরোজ অনেক প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা আদায় করে মূলহোতা রায়হানকে দেন। ২০২১ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে চাকরি দেওয়ার জন্য এক প্রার্থীর কাছ থেকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা নেয় এবং জাল নিয়োগপত্র দেয়। পরে সৈনিক পদে যোগ দিতে যাওয়ার সময় ঐ প্রার্থী ভুয়া নিয়োগপত্রের কথা জানতে পারেন। পরে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে জয়পুরহাট র্যাব ক্যাম্পে অভিযোগ করেন। এরপর র্যাব কয়েকটি জাল নিয়োগপত্র ও অন্যান্য নথিসহ তাকে আটক করে।
র্যাব আরো জানান, মোঃ নুর নবী এবং মোঃ ওয়াকিল উদ্দিন উভয়েই একটি প্রতারক সিন্ডিকেট হিসাবে কাজ করছেন এবং ২০১৮ সাল থেকে দরিদ্র লোকদের সাথে প্রতারণামূলক কার্যকলাপ করছেন যেখানে নুর নবী মূলহোতা। তার চাচাতো ভাই একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে চাকরির নিরাপত্তার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে কখনো বা প্রাথমিক বিদ্যালয়েরর চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিত। ওয়াাকিল উদ্দিন তার সহকারী হিসেবে কাজ করেন এবং জাল কাগজপত্র তৈরির দায়িত্ব পালন করেন। নুর নবী ২০২১ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার জন্য ভিকটিম শাহজাহান আলীর কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা নেন। পরে ওয়াকিল উদ্দিনের মাধ্যমে তাকে মিথ্যা নিয়োগপত্র দেন। ঢাকায় ওই চাকরিতে যোগ দিতে গেলে ওই ভুয়া নিয়োগপত্রের কথা জানতে পারেন তিনি। পরে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে জয়পুরহাট র্যাব ক্যাম্পে অভিযোগ করলে র্যাব জাল কাগজপত্রসহ তাকে আটক করে।
এ দুটি ঘটনায় আটককৃতদের বিরুদ্ধে জেলার আক্কেলপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আগামীকাল তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হবে।
ভূয়া নিয়োগপত্র দিয়ে অর্থ আত্মসাৎকারী চক্রের ৪ জন প্রতারক আটক